Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

ইউনিসেফ জিওবি প্রজেক্টস (স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও সেনিটেশন)

বাংলাদেশে শিশুদের এখন তাদের পঞ্চম জন্মদিন পেরিয়ে বেঁচে থাকার সম্ভাবনা আগের যে কোনো সময়ের তুলনায় বেশি। ১৯৯০ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে শিশুমৃত্যুর হার প্রায় অর্ধেক হয়ে গেছে, যা অত্যন্ত উৎসাহব্যাঞ্জক অগ্রগতি এবং এর অর্থ হচ্ছে - লাখ লাখ শিশুর জীবন বাঁচানো গেছে।

তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নবজাতকের মৃত্যুহার সামান্য বেড়েছে, প্রতি ১,০০০ জীবিত জন্ম নেওয়া শিশুর মধ্যে এখন ২৬ জনের মৃত্যু হয়।

বেশিরভাগ শিশুর মৃত্যু হয় জীবনের প্রথম দিন বা সপ্তাহে। এর কারণ, জন্মের সময় যথাযথ সেবা ও যত্নের অভাব। শিশুর জন্মের সময় প্রায়শই কোনো ধাত্রী বা দক্ষ কর্মী না থাকার কারণে নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনাগুলো ঘটছে। বাংলাদেশে সন্তান জন্মদানের প্রতি ১০টি ঘটনার মধ্যে মাত্র ৬টি সম্পাদিত হয় দক্ষ স্বাস্থ্যকর্মীর তত্ত্বাবধানে, যা বিশ্বের সর্বনিম্ন হারগুলোর অন্যতম।

ফলস্বরূপ, ৫ বছর বয়সের আগে যেসব শিশুর মৃত্যু হয়, তাদের দুই-তৃতীয়াংশই মৃত্যুবরণ করে নবজাতক হিসেবে। পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু মৃত্যুর প্রধান কারণগুলো হল নিউমোনিয়া, পানিতে ডুবে যাওয়া, শ্বাসযন্ত্রের রোগ ও অপুষ্টি।

বাংলাদেশে সব শিশু বেঁচে থাকার সমান ও সর্বোচ্চ সুযোগ পায়না। যেসব শিশুর জন্ম গ্রামীণ এলাকায়, দরিদ্র পরিবারে এবং যাদের মায়েরা অশিক্ষিত, তাদের ৫ বছর বয়স হওয়ার আগেই মারা যাওয়ার ঝুঁকি অন্যদের চেয়ে বেশি।

বিভিন্ন রোগ থেকে শিশুদের সুরক্ষা দিতে বাংলাদেশে জাতীয় টিকাদান কর্মসূচির আওতায় বছরে ৩৮ লাখ শিশুকে লক্ষ্য করে টিকা কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এই কর্মসূচির মাধ্যমে ১২ মাস বয়সের মধ্যে প্রায় ৮৪ শতাংশ শিশুকে সম্পূর্ণরূপে টিকা দেওয়া হয়।

তবে দেশে টিকাদানের পরিধি ও বিস্তার বেশি হলেও শহর ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাসকারী শিশুরা সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় টিকা সাধারণত কম পায়।

চ্যালেঞ্জের মধ্যে আরও রয়েছে, প্রসবকালীন পরিচর্যার নিম্নমান, প্রসবপূর্ব দুর্বল পরিচর্যা সেবা; বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায় ও শহুরে বস্তিতে অপর্যাপ্ত স্বাস্থ্যসেবা এবং কমিউনিটি স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীদের সক্ষমতার অভাব।

সমাধান

ইউনিসেফের লক্ষ্য হলো, প্রতিটি শিশু যাতে বেঁচে থাকতে পারে এবং সুস্থভাবে বেড়ে উঠতে পারে সেটা নিশ্চিত করা।

ইউনিসেফ মা, নবজাতক ও শিশুদের, বিশেষ করে সবচেয়ে নাজুক পরিস্থিতিতে বসবাসকারী জনগোষ্ঠীর জন্য মানসম্পন্ন স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তির সুযোগ বাড়াতে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কাজ করছে।

এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য ইউনিসেফ ও তার অংশীদাররা তিনটি বিষয়কে অগ্রাধিকার দিচ্ছে:

সর্বজনীন স্বাস্থ্য সেবা: কোভিড-১৯ মহামারি এমন স্বাস্থ্য ব্যবস্থার গুরুত্ব তুলে ধরেছে যা যে কোন প্রতিঘাত মোকাবেলা এবং জরুরি পরিস্থিতিতে সাড়া দিতে সক্ষম। ইউনিসেফ জাতীয় ও কমিউনিটি পর্যায়ে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা অর্জনে বাংলাদেশ সরকারকে সহায়তা করছে। এর মধ্যে রয়েছে প্রমাণ-ভিত্তিক স্বাস্থ্যবিষয়ক নীতিমালা প্রণয়ন, কর্মসূচি পরিকল্পনা ও বাজেট নির্ধারণ।

ন্যায়ভিত্তিক স্বাস্থ্য সেবাইউনিসেফ সবচেয়ে প্রান্তিক শিশুদের প্রতি লক্ষ্য রেখে মা, নবজাতক, শিশু ও কিশোরীদের জন্য ন্যায়ভিত্তিক ও মানসম্পন্ন স্বাস্থ্য এবং টিকাদান সেবা নিশ্চিত করতে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাগুলোর সক্ষমতা জোরদার করছে।

প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবাকে শক্তিশালী করাশিশু ও নারীরা যাতে তাদের স্বাস্থ্য ও সামগ্রিক কল্যাণকে প্রভাবিত করে এমন বিষয়গুলো সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে পারে তা নিশ্চিত করতে কাজ করছে ইউনিসেফ। এটি তাদের মধ্যে স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তোলার পাশাপাশি শহর ও গ্রাম –- উভয় এলাকার মানুষের কাছাকাছি স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছানোর লক্ষ্যকে জোরদার করবে।